অভিবাদন হে বৈশাখ

বৈশাখ তোমাকেই জানাতে সু-স্বাগতম,

অপরূপ সাজে সেজেছে বসন্ত প্রিয়তম।

গাছে গাছে ফুটেছে ফুল পাখিরা করেছে গান,

সকল-ই তোমার বরণার্থে অপরূপ প্রকৃতির দান।

বালিকারা বেরিয়েছে আজি বাহারী শাড়ী পরে,

ভিড় জমিয়েছে যত্রতত্র বৈশাখী চত্বরে,

তিনদিন ধরে সাতদিন ব্যাপি চলবে বৈশাখী মেলা,

তবুও খোঁজ পায়নি পাশের বাড়ির জীম ও ডেলা।

কখনও যেওনা ভাই জুই চামেলীর পান্তার দোকানে,

থাকতে পারে গল্পের বুড়ির শিংমাছ তার মাঝখানে।

দু-মুঠো পান্তা আর এতটুকুন ভর্তা দিয়ে পাতে,

হাজার টাকা আদায় করে নিবে কৌশলে তাতে।

গত বৈশাখের গেঞ্জিটাতে এখন ও লেখা আছে,

এসো হে বৈশাখ-1414,

হঠাৎ ফাল্গুনি ডেকে নিয়ে বলল কাছে,

লিখতে পার কী নববর্ষের কোন পদ্য।

তাইতো আমি ঋতুরাজ বসন্তের লীলালগ্নে,

বৈশাখ তোমাকে শুভেচ্ছা জানাই উষ্ম করমর্দনে।

চৈত্রের শেষে গ্রীষ্মের দূরন্ত দাবদাহের সাঁঝে,

বৈশাখ তুমি ফিরে আসো বার বার মোদের মাঝে।।

মো: সহিদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, শারীরবিদ্যা ও ওষূধবিদ্যা বিভাগ, বশেমুরকৃবি, গাজীপুর।

 

নিরাকার বৃষ্টি (Formless Rain)

আষাঢ় শ্রাবনের ঋতুবতী বর্ষায়,

নিশ্চিদ্র নীলাকাশ নিশ্চিন্তে ঝরে যায়।

গ্রীষ্মের গহীন অরণ্যের তৃঞ্চার্ত হৃদয়,

মুহূর্মূহ সবুজ, সতেজ শ্যামলিমার স্পর্শে ভরে যায়।

পরতে পরতে পেয়ে মোহিনী শক্তির সঞ্চার,

শাখে কাখে ভরে দেয় সবুজ পাতা, ফুল ও ফলের সমাহার।

নেই কোনো সঞ্জিবনী শক্তি বিহনে শব্দ ঝর ঝর,

অবিরত ঝরে যায় ধারন করে বর্ণ নিরাকার।

নিরাকার বৃষ্টি ভাবনা যোগায় কিশোরীর মনে,

বেরোতে না পারলেও তাই সে থাকে অশরীরি ঘরের কোণে।

তবুও তার মানে না মন একটুখানি অবগাহনের আশায়,

দু-চার জন সাথী করে ভিজবে বলে শুরুতে  পা ভিজায়।

এত রূপ রস রং কোথায় পেলে তুমি নিরাকার বৃষ্টি!!

শুরু হলেই অলহ্মে কেড়ে নাও সকল প্রাণের দৃষ্টি।

উর্ধ্ব গগণে তাকাও তবে মেলে ধর এবার অন্তর্দৃষ্টি,

বুঝবে তবে আমি অসীম স্রষ্টার নিরাকার বৃষ্টি।

মো: সহিদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, শারীরবিদ্যা ও ওষূধবিদ্যা বিভাগ, বশেমুরকৃবি, গাজীপুর।

 

বিদ্রোহী নজরূল

হে বিদ্রোহী নজরূল!!

বিপ্লবের অগ্নিমন্ত্রের ডাক, সে কী তোমারই আহ্বান?

কোথায় তুমি ঘুমিয়ে আছো কোথায় তোমার বাক?

আর একবার লেখনীতে বলে যাও সেই বিদ্রোহের ডাক।

নিপিড়ীত বঞ্চিত মানুষকে আজ করতে হবে মুক্ত দিতে হবে মুক্তিদান।

সে তো তোমারই কন্ঠের আহ্বান, যাহার পরশে শিউরে উঠত ভীরূ কাপূরূষের প্রাণ।

প্রভূ তুমি সাহস দাও, শক্তি দাও যেন তোমার সহায়তায়,

নজরূলের সেই পথ ধরে নবজীবন হতে পারে বিদ্রোহবান।

মো: সহিদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, শারীরবিদ্যা ও ওষূধবিদ্যা বিভাগ, বশেমুরকৃবি, গাজীপুর।

বিকেলের ভাবনা

পাখীরা উড়ে যায়, কার ইশারায় কোন সে ঠিকানায়,

পড়ন্ত বিকেলে নীড়ে ফেরে, ক্ষান্ত দিয়ে ভোজনালয়।

ক্লান্তি শেষে আপন মনে কেউবা ঘুমায় নীড়ে,

কেউবা ঝিমায় বৈদ্যুতিক খুটি ও তারে।

সন্ধ্যাবেলায় অজপাড়ায় তাদের কিচিরমিচির,

শুনতে যদি চাও হে ভাই মন করো যে ধীরস্থির।

ডাহুক ডাকে আপন মনে করে ছন্দময়,

তাল মিলিয়ে তার-ই সাথে গৃহবধূ সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বালায়।

বিলের ধারে দস্যিছেলে আকাশপানে চায়,

শুভ্রনীলে উর্ধ্বগগনে সাদাবক পাখা ঝাপটায়।

ভাবুক ছেলে একা হয়ে ভাবে মনে মনে,

ফিরতে হবে আমায় এবার, নইলে ভাইয়া ধরবে যে কান টেনে।

মো: সহিদুল ইসলাম, সহকারী অধ্যাপক, শারীরবিদ্যা ও ওষূধবিদ্যা বিভাগ, বশেমুরকৃবি, গাজীপুর।