বশেমুরকৃবিতে তলোয়ার সীমের দু’টি জাত উদ্ভাবন

 

ধারাবাহিক গবেষণার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগ তলোয়ার শিম (ঝড়িৎফ ইবধহ)—১ এবং তলোয়ার শিম (ঝড়িৎফ ইবধহ)—২ উদ্ভাবন করেছে। অভ্যন্তরীণ ও মাঠ পর্যায়ে সফলভাবে সম্পাদিত বহু পরীক্ষা—নিরীক্ষার পর এ বিইউ তলোয়ার ১ এবং বিইউ তলোয়ার ২ নামে জাতটি উদ্ভাবিত হয়। জাতীয় বীজ বোর্ডে সম্প্রতি অনুমোদন পাওয়া এ নতুন জাতের এ সবজিদ্বয় শারীরবৃত্তীয় ও অধিক পুষ্টিগুণ সম্পন্ন বলে গবেষণায় প্রমাণিত। গ্রীষ্ম মৌসুমে মার্চ থেকে জুলাই মাসে অধিক ফলন দিতে সক্ষম হওয়া এ জাত দু’টি স্থানীয় জনগোষ্ঠির নিকট সবজি এবং এর বড় মোটা বীজ ডাল হিসেবে অধিক পরিচিত। বহুবর্ষজীবী লিগিউম জাতীয় উদ্ভিদ এ তলোয়ার শিম ১ আকারে বড়, লম্বা ও তলোয়ারের মতো দেখতে বলে এর নাম এমনটি হয়েছে। এর প্রতিটি শিমের ওজন ৫০—৬০ গ্রাম এবং গাঢ় গোলাপী রঙের যা থেকে প্রায় ৬ মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া সম্ভব। ক্যানাভালিয়া গ্লাডিয়েটা বৈজ্ঞানিক নামের এ ফসলটি থেকে যথাযথ চাষের মাধ্যমে হেক্টর প্রতি ১৩—১৪ টন ফলন পাওয়া সম্ভব। অন্যদিকে বিইউ তলোয়ার শিম ২ বীজটি আকারে ছোট এবং হালকা গোলাপী রঙের যার প্রতিটি শিমের ওজন ৬৫—৭০ গ্রাম। প্রায় ৭ মাস পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম হওয়া এ সোর্ড বিন ২ থেকে হেক্টর প্রতি ২০—২২ টন ফলন পাওয়া যাবে। এ জাত উদ্ভাবনে ভূমিকা রাখেন উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের গবেষক প্রফেসর ড. জাহিদুল হাসান। ২০১৯ সালে অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক সহায়তায় এ গবেষণা কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে এর জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করে ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে সোর্ড বিন ১ এবং সোর্ড বিন ২ নামে দু’টি জেনোটাইপকে নির্ধারণ করা হয়। উচ্চ প্রোটিন সম্পন্ন এ বিইউ তলোয়ার শিম ১ এবং ২ নামে জাতদ্বয় কৃষকের মাঠে সম্প্রসারণ করা হলে দেশের চাহিদা পূরণ করে বিশ্ববাজারে বিক্রি করে চাষিরা আর্থিকভাবে লাভবান হবেন বলেও গবেষক মনে করেন। নিবন্ধিত জাত দু’টি অত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যানতত্ত্ব বিভাগের সংশ্লিষ্ট বিজ্ঞানীদের দ্বারা গুণগতমাণ নিশ্চিতপূর্বক কৃষক পর্যায়ে পেঁৗছানো হবে বলে তিনি আশ্বস্ত করেন। এ বিষয়ে বশেমুরকৃবি’র ভাইস—চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া বলেন, এ দু’টি জাত উদ্ভাবনের মাধ্যমে এ বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণায় আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলো। এজন্য তিনি সংশ্লিষ্ট গবেষকদের আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। যেকোন ধরণের নতুন উদ্ভাবনে অত্র বিশ্ববিদ্যালয় সর্বদা সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশাবাদও ব্যক্ত করেন ভাইস—চ্যান্সেলর। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত মোট ৮৩টি জাতের সফলতম উদ্ভাবন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রেখেছে যা দেশের কৃষি উন্নয়নে কাক্সিক্ষত ভূমিকা রাখছে।