বশেমুরকৃবি’র চতুর্থ সমাবর্তন: অসাম্প্রদায়িক যুক্তিবাদী সুষম সমাজ গঠনে সুশিক্ষার কোন বিকল্প নেই-শিক্ষামন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বশেমুরকৃবি) এর চতুর্থ সমাবর্তন গত ১৩ মে ২০২৩, শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সুফিয়া কামাল অডিটরিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর এর অনুশাসনে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এম.পি সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। সমাবর্তন বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় বিজ্ঞান একাডেমির সম্মানিত ফেলো এবং কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজস্থানের বিরলা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এন্ড সায়েন্স এর সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শৌভিক ভট্টাচার্য্য।
সমাবর্তনে সর্বমোট ২৩২০ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়, তম্মধ্যে ৬০১ জন বিএস (কৃষি), ২৭৭ জন বিএস (ফিশারিজ), ২৩২ জন ডিভিএম, ৩৩৫ জন বিএস (কৃষি অর্থনীতি), ৮৪০ জন এমএস এবং ৩৫ জন পিএইচডি শিক্ষার্থী।
সমাবর্তন বক্তা ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. শৌভিক ভট্টাচার্য্য গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমরা চমৎকার মানবিক পূর্ণাঙ্গ মানুষ হয়ে বিশাল কর্মজীবনে প্রবেশ করে অসাম্প্রদায়িক চেতনার বিকাশ ঘটিয়ে দেশ ও জাতির মুখ উজ্জ্বল করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রসঙ্গে বলেন, উন্নত শিক্ষাদান পদ্ধতি ও ফলপ্রসু গবেষণার এক অনন্য প্রতিষ্ঠান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি পরিবর্তনশীল বিশ্ব এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেদেরকে সক্ষম করে গড়ে তোলার আহবান জানান।
সমাবর্তনের মাহেন্দ্রক্ষণে সকল কৃষি গ্র্যাজুয়েটবৃন্দকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে সভাপতির বক্তব্যে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এম.পি বলেন, বঙ্গবন্ধু কৃষকের অকৃত্রিম বন্ধু ছিলেন এবং তিনিই কৃষিবিদদের প্রথম শ্রেণির মর্যাদা দিয়ে চিরঋণী করে গেছেন। তিনি কৃষিতে বঙ্গবন্ধুর কৃষি বান্ধব নীতির কথা কৃতজ্ঞ চিত্তে স্মরণ করে বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুদূর প্রসারী ঐতিহাসিক কৃষি নীতি এবং সে আলোকে বর্তমান সরকারের গৃহীত বাস্তবমূখী পদক্ষেপের ফলে কৃষিতে আজ বৈপ্লবিক পরিবর্তন সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো বলেন, দেশরতœ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে।
সম্মানিত অতিথি যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জনাব মোঃ জাহিদ আহসান রাসেল, এমপি গ্র্যাজুয়েটদের উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়ে কৃষি বান্ধব সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের প্রশংসা করে বলেন, আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের কৃষিসহ সার্বিক উন্নয়ন ও অগ্রগতির নানাবিধ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করে যাবে বলে আমার বিশ্বাস।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে মাননীয় পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী প্রফেসর ড. শামসুল আলম সমবেত গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে বলেন, তোমাদের কাঙ্খিত ডিগ্রি অর্জনে সমাজ ও রাষ্ট্রের ব্যয় অধিক। তাই তোমাদের সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। তিনি গুণগত শিক্ষা ও গবেষণার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
স্বাগত বক্তব্যে মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ গিয়াসউদ্দীন মিয়া গ্র্যাজুয়েটদের আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়ে বলেন তোমরা দেশপ্রেম, মানবীক মূল্যবোধ ও সৃজনশীলতা দিয়ে নিষ্ঠা ও সততার সাথে দেশের কল্যাণে কাজ করবে এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে নিজেকে আত্মনিয়োগ করবে। পরিশেষে তিনি সম্মানিত অতিথিবৃন্দ, সমাবর্তন বক্তা এবং মান্যবর শিক্ষামন্ত্রীসহ আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।
বিকেলে জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।